সোস্যাল মিডিয়া মার্কেটিং কি? কেন করবেন সোস্যাল মিডিয়া মার্কেটিং?

ডিজিটাল মার্কেটিং এর একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক হলো “সোস্যাল মিডিয়া মার্কেটিং”। আজকে আমরা সোস্যাল মিডিয়া ও সোস্যাল মিডিয়া মার্কেটিং করে কিভাবে নিজের বিসনেজ ও ক্যারিয়ার উজ্জ্বল করা,যায় সেই বিষয়েই আলোচনা করবো।

শুরুতেই জেনে নেওয়া যাক

সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং কি কিভাবে সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং করে আয় করা যায়
সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং কি কিভাবে সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং করে আয় করা যায়

সোস্যাল মিডিয়া কি

সোস্যাল মিডিয়াঃ যে প্রযুক্তির মাধ্যমে বিভিন্ন ভার্চুয়াল নেটওয়ার্ক ও সম্প্রদায়ের মধ্যে ডিজিটালভাবে ধারণা, চিন্তাভাবনা ও তথ্য ভাগ করে নেওয়া যায়, অর্থাৎ ইন্টারনেটের মাধ্যমে একটা ভার্চুয়াল জগৎ তৈরী করে সারা পৃথিবী জুরে যোগাযোগ মাধ্যম তৈরী করা যায়ই তাই হলো সোস্যাল মিডিয়া।

সোস্যাল মিডিয়া হলো এমন এক সামাজিক মাধ্যম, যা দ্বারা বর্তমান যুগে ব্যক্তি তার প্রায় সকল কার্যক্রমই সম্পাদন করে থাকে।আমাদের ধ্যান,জ্ঞান,চিন্তাধারা,আমাদের ক্যারিয়ার,আমাদের উন্নত জীবন ব্যবস্থা, বিনোদন সবকিছুই সীমাবদ্ধ এই সোস্যাল মিডিয়ার মধ্যে। আর এভাবেই ব্যক্তিজীবনে সোস্যাল মিডিয়া একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হয়ে দাড়িয়েছে।

সোস্যাল মিডিয়ার কিছু গুরুত্বপূর্ণ অংশঃ

বহুল পরিচিত ও ব্যবহৃত সোস্যাল মিডিয়া সাইট হলো

Facebook

★What’sapp

★Gmail

★Twitter

★Youtube

নিচে বিস্তারিত আলোচনা করা হলোঃ

Facebook : মার্ক জুকারবার্গ নামের একজন জৈনক ব্যক্তি তার কিছু বন্ধুদের সাথে মিলে শুধুমাত্র যোগাযোগ মাধ্যম তৈরী করার লক্ষ্যে সৃষ্টি করেন ” ফেসবুক”। পরবর্তিতে ফেসবুক আপডেট হতে হতে বিশাল আকার ধারন করে।

ফেসবুক এখন শুধুমাত্র যোগাযোগের মাধ্যম হিসেবেই ব্যবহৃত হয়না,,সারা পৃথিবীর তথ্য সংগ্রহ,স্টাডি,নিউজ এমনএগ এগিয়ে কি বর্তমানে বিসনেস এর ক্ষেত্রেও ব্যবহৃত হচ্ছে।।।

অনলাইন মুখি বর্তমান সমাজে সবকিছুই আপডেট হয়ে অনলাইনে অংশগ্রহন করছে।ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোও তাই।।তারা তাদের ব্যবসায়িক কার্যক্রমগুলো অনলাইনের মাধ্যমে পরিচালনা করছে।আর এতে তারা সফলতাও লাভ করছে।

What’sapp: দেশ থেকে বিদেশে,বন্ধু সার্কেলে সবচেয়ে সহজেই যোগাযোগ করার মাধ্যমই হচ্ছে WHat’sapp.সম্প্রতি যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি ও What’sapp আরো এগিয়ে চলার লক্ষ্যে চালু করেছে What’sapp business.

মূলত ছোট ব্যবসার মালিকদের জন্য এটি তৈরি করা হয়েছে। প্রোডাক্ট এবং সেবা প্রচারের জন্য ক্যাটালগ তৈরি, মেসেজ অটোমেট করতে, বাছাই করতে এবং দ্রুত জবাব দিতে টুলের মাধ্যমে সহজে গ্রাহকদের সাথে কানেক্ট করা যায় What’sapp business এর মাধ্যমে।

Gmail: জিমেইল তো আমরা সকলেই জানি।।প্রয়োজনীয় ও গুরুত্বপূর্ণ বার্তা প্রেরন করার জন্যই মেইল ব্যবহার করা হয়।এটি অত্যন্ত সহজ ও নিরাপদ মাধ্যম।

জিমেইল একাউন্ট দিয়ে ফেসবুক, টুইটার, ইন্সটাগ্রাম, এই রকম আরো অনেক একাউন্ট ব্যবহার করা যায়।
জিমেইল দিয়ে প্লে স্টোর অ্যাপস চালু করা,সহজেই তথ্য আদান প্রদান করা,
Google Drive অ্যাপস এর মাধ্যমে জিমেইল একাউন্টে অনেক তথ্য সেভ করে রাখা যায়। যেমনঃ ছবি, নাম্বার, ভিডিও ক্লিপ ইত্যাদি ডাটা রাখা যায়
অনলাইনে বিভিন্ন কাজ কএবং এরা যায়। যেমনঃ ওয়েবসাইট ব্যবহার করতে হলে জিমেইল প্রয়োজন হয়।

Twitter:
টুইটার সামাজিক আন্তঃযোগাযোগ ব্যবস্থা ও মাইক্রো ব্লগিংয়ের একটি ওয়েবসাইট, যেখানে ব্যবহারকারীরা সর্বোচ্চ ২৮০ অক্ষরের বার্তা আদান-প্রদান ও প্রকাশ করতে পারেন।

টুইটার বিশ্বের 335 মিলিয়ন ব্যবহারকারীদের জনপ্রিয় একটি সামাজিক মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম। অনেক ব্যবসায়ী তাদের গ্রাহকদের সাথে যোগাযোগ করতে টুইটার ব্যবহার করেন।

টুইটারে একটি বিশাল ব্যবহারকারীবেস রয়েছে, যা সম্ভাব্য গ্রাহকদের অন্তর্ভুক্ত করতে পারে।হ্যাশট্যাগ ব্যবহার করে কোনও নির্দিষ্ট বিষয়ে বা নির্দিষ্টকোনও স্থানে আগ্রহী শ্রোতাদের কাছে পৌঁছাতে সহায়তা করতে পারে।

টুইটারের মাধ্যমে, ১০০ মিলিয়নের অধিক মানুষের সাথে প্রতিদিন কমিউনিকেট করা সম্ভব। তাই বানিজ্যিক ক্ষেত্রে Twitter এক বিশেষ ভুমিকা পালন করে আসছে শুরু থেকেই।

Youtube: বর্তমান আধুনিক যুগে জনপ্রিয় ও বহুল ব্যবহৃত একটি মাধ্যম হচ্ছে YouTube, মানুষ পড়ার থেকে দেখায় বেশি আকর্ষিত হয় শুরু থেকেই।এজন্যই Youtube এর ভিডিও চিত্রগুলো দর্শকদের পছন্দের শীর্ষ তালিকায় রয়েছে।

শুরুতে YouTube শুধুমাত্র বিনোদনের মাধ্যম হিসেবেই ব্যবহৃত হতো।কিন্তু সময়ের পরিবর্তনের সাথে সাথে YouTube এখন এক সামাজিক মাধ্যম হয়ে দাড়িয়েছে। YouTube এর মাধ্যমে জনসচেতনতা মূলক ভিডিও, শিক্ষা, অনুপ্রেরণা ও বিভিন্ন কাজে ব্যবহৃত হচ্ছে।

যেহেতু অধিকাংশ লোক তাদের জীবনের বেশ খানিকটা সময় Youtube এ ব্যয় করছে।তাই ব্যবসায়ীগন তাদের ব্যবসায়িক প্রচার প্রচারনার জন্য YouTube কেই বেচে নেয়। কোম্পানির সম্পূর্ণ তথ্যচিত্র,তাদের পন্য ও গ্রাহক সেবা সবকিছুই সুনির্দিষ্ট ভাবে ফুটিয়ে তোলে ভিডিও কন্টেন্ট এর মাধ্যমে।

দর্শক সেগুলো দেখেই সেই সব পন্য ও পরিসেবা গ্রহনে আগ্রহ প্রকাশ করে।

সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং-

উপরের তথ্যগুলো থেকে নিশ্চয়ই বুঝতে পেরেছেন আমরা সোস্যাল মিডিয়ার ওপর কতটা নির্ভরশীল।
পৃথিবীর মোট জনসংখ্যা প্রায় নবম এ-তৃতীয়াংশ মানুষ সোশ্যাল মিডিয়াতে অবস্থান করে। সংখ্যার হিসেবে সেটি প্রায় তিন বিলিয়ন এর কাছাকাছি। এই বিশাল সংখ্যক জনগোষ্ঠীকে ব্যবহার করে যে কোন ব্যবসা সহজে প্রমোশন করা যা। সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করে এই বিশাল অংকের অডিয়েন্সের নিকট প্রমোশন কর্মকেই মূলত সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং বলে।

সোস্যাল মিডিয়া ব্যবহারকারীকে এই সাইট গুলোর মাধ্যমে টার্গেট করে নিজেদের বানিজ্যিক পরিসেবা গ্রহনের বার্তা অনায়াসেই পাঠানো সম্ভব।তাদেরকে কাস্টমার বানিয়ে নিজের ব্যবসায়িক উন্নতি সম্বভ।

এখন অনেক ক্ষেত্রেই, এই সোশ্যাল মিডিয়া গুলি, “অনলাইন মার্কেটিং” এর এক অনেক শক্তিশালী মাধ্যম হয়ে দাঁড়িয়েছে। products, brands, services এগুলির প্রোমোশনের জন্য এদের ব্যবহার হচ্ছে।

আসলে অনলাইন মার্কেটিং, এমন এক মার্কেটিং এর মাধ্যম, যেখানে আমরা অনলাইন ইন্টারনেট ব্যবহার করা সকল লোকেদের কাছে নিজের পণ্য সার্ভিস, বিসনেস বা যেকোনো জিনিস প্রচার বা promotion করে সে বিষয়ে তাদের জানাতে পারি বা পণ্যের জন্য ক্রেতা পেয়ে যেতে পারি।

এখন, ইন্টারনেটে অনলাইন এক্টিভ থাকা লোকেদের মধ্যে অনেক বড়ো সংখ্যায় লোকেরা সোস্যাল মিডিয়া প্লাটফর্ম  গুলি ব্যবহার করেন। তাই, এই Facebook, Twitter, , YouTube আর এরকম বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়া প্লাটফর্ম গুলিতে পণ্য বা ব্যবসা প্রচার করাটা অনেক লাভজনক প্রমাণিত হচ্ছে।

কেন সোস্যাল মিডিয়া মার্কেটিং করবেনঃ

বর্তমানে সোশ্যাল মিডিয়াতে ফেসবুক এবং ইউটুব মার্কেটিং ই সবথেকে শীর্ষে আছে।চলুন বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক।

ডিজিটাল মার্কেটিং জগতে ফেসবুক মার্কেটিং  সবচেয়ে আলোচিত । ফেসবুকে অ্যাডভান্সড সব ফিচার যুক্ত হওয়ায় ডিজিটাল মার্কেটিং দুনিয়ায় ঝড় তুলেছে ফেসবুক মার্কেটিং। ফেসবুক এখন আর কেবল বিনোদনের মাধ্যম না। সঠিক ব্যবহার জানলে এটিই হতে পারে আপনার আয়ের অন্যতম উৎস।

আজ লক্ষ লক্ষ লোকেরা ইউটিউবে নিজের সমস্যার সমাধান ভিডিওর মাধ্যমে খুঁজতে আসেন। এবং, সত্যি বললে, ভিডিওর মাধ্যমে যেকোনো জিনিসের ব্যাপারে জানাটা কিন্তু অনেক সহজ এবং সোজা।

আপনি ফ্রীতেই নিজের একটি ইউটিউব চ্যানেল বানিয়ে, তারপর তাতে নিজের বিসনেস,পন্য ও সেবা এর সাথে জড়িত বিষয় গুলি নিয়ে ভিডিও বানাতে পারবেন। এতে, অনেক সহজে ভিডিওর মাধ্যমে আপনি আপনার ব্যবসা বা পণ্যের মার্কেটিং করে নিতে পারবেন।

টুইটার মার্কেটিং বর্তমান সময়ের অত্যান্ত জনপ্রিয় একটি প্রচার মাধ্যম। আপনি সহজে আপনার কাস্টমারের কাছে আপনার বিজ্ঞাপনটি প্রচার করতে পাচ্ছেন।

টুইটার ব্যবহারকারীর নিকট আপনার বিজ্ঞাপন পৌঁছে দেয়ার সিস্টেমকেই টুইটার মার্কেটিং বলে। এখনে আপনি অডিও, ভিডিও, টেক্সট এর মাধ্যমে আপনার প্রচার চালাতে পারেন।

আপনি যদি চান রিয়েল কাস্টমারের কাছে আপনার বিজ্ঞাপনটি প্রচার করতে চান তবে আপনার জন্য টুইটার ই সবথেকে ভালো মাধ্যম। কারণ সেলিব্রেটি থেকে শুরু করে রাজনীতিবিদ, ব্যবসায়ী, অভিনেতা, স্পোর্টম্যান সবাই অন্যন্য সোশ্যাল মিডিয়ার থেকে বেশী একটিভ টুইটারে থাকেন।

শেষকথাঃ

সোস্যাল মিডিয়া বর্তমানে এই পৃথিবীকে আধুনিকায়নের চাদরে মুড়ে নতুন বিশ্বে পরিনত করছে।নিজেকের আরো উন্নত করার জন্য ডিজিটাল প্লাটফর্মগুলোকে প্রাধান্য দিয়ে তাদের জীবনের সকল কার্যক্রম তথা ব্যবসা -বানিজ্যও এখন সোস্যাল মিডিয়াতে নিতে এসেছে।।

সোস্যাল মিডিয়ার অন্তর্ভুক্ত হলেই তো ব্যবসা সচল থাকবে না।প্রতিযোগিতার মার্কেটে নিজের স্থান বজায় রাখতে নিয়মিত ব্যবসায়িক প্রচার অর্থাৎ মার্কেটিং করে যেতে হবে।আর এজন্য সোস্যাল মিডিয়া মার্কেটিং হতে পারে সবচেয়ে সেরা মাধ্যম।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top