২০২৩ সালের সেরা ফ্রিল্যান্সিং ওয়েবসাইট : অনলাইনে ফ্রিল্যান্সিং করে আয়। করার জন্যে শুরুতে, ফ্রিল্যান্সিং এর ওয়েবসাইট গুলো সম্পর্কে ভালো ভাবে ধারণা নিতে হবে।
কোন ফ্রিল্যান্সিং ওয়েবসাইটের পলিসি কেমন সে বিষয়ে যদি না জানা থাকে। তাহলে কিন্তু ফ্রিল্যান্সিং করা অনেক সমস্যা হয়ে থাকে।
আমাদের এই পেজে বর্তমান সময়ের জনপ্রিয় কিছু, ফ্রিল্যান্সিং ওয়েবসাইট এর বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হবে।
আপনি যদি পুরো লেখা মনযোগ দিয়ে পড়েন তাহলে কাজ শুরু করার জন্যে, কোন ধরণের প্লাটফর্ম বেছে নিতে হবে। সেই বিষয়ে আপনি ক্লিয়ার হতে পারবেন।
ফ্রিল্যান্সিং এর কাজ করার জন্য আপনাকে শুরুতে জেনে নিতে হবে। ফ্রিল্যান্সিং ওয়েবসাইট এবং আউটসোর্সিং ওয়েবসাইট গুলোর মধ্যে থাকা পার্থক্য গুলো। আদৌ দুইটির মধ্যে কোন পার্থক্য আছে কিনা।
অনেক লোক আছে যারা ফ্রিল্যান্সিং এবং আউটসোর্সিং দুইটিকে একই মনে করে থাকে। তাই কোন বিভ্রান্তির কারণ নেই। আমরা এই বিষয়ে আপনাকে পরিষ্কার ধারণ দিব।
ফ্রিল্যান্সিং এবং আউটসোর্সিং ওয়েবসাইট মধ্যে পার্থক্য
কোন প্রকার বাঁধা ছাড়াই স্বাধীন ভাবে অনলাইনে কাজ করে টাকা আয় তাকে ফ্রিল্যান্সিং বলা হয়। এক্ষেত্রে যারা ফ্রিল্যান্সিং করে, তাদেরকে বলা হয় ফ্রিল্যান্সার।
অপরদিকে, আউটসোর্সিং হচ্ছে- কোন চাকরিতে যুক্ত না হয়েই, নির্দিষ্ট টাকার বিনিময়ে কোন ফ্রিল্যান্সারকে দিয়ে কোন প্রকার কাজ করিয়ে নেওয়া।
আপনি যদি উক্ত বিষয়টি পড়ে থাকেন। তাহলে বুঝতে পারছেন যে, ফ্রিল্যান্সিং এবং আউটসোর্সিং এর মধ্যে কি পার্থক্য আছে।
এই দুইটি কাজ করার জন্য কিন্তু আলাদা প্লাটফর্ম হয়ে থাকে। এর কারণ হলো একজন ফ্রিল্যান্সার যে, জায়গায় ফ্রিল্যান্সিং করার জন্যে কাজ খুজে, সেই একই জায়গায় একজন আউটসোর্সিং এর ক্লাইন্ট নিজের কাজ করানোর জন্য ফ্রিল্যান্সার খুজে থাকে।
এক কথায় বলা যায়, উক্ত আলোচনায় যে, ফ্রিল্যান্সিং ও আউটসোর্সিং এর নাম বলবো, সেগুলো ফ্রিল্যান্সিং সাইট ও আউটসোর্সিং সাইট।
ফ্রিল্যান্সিং ওয়েবসাইট গুলো কিভাবে কাজ করে?
ফ্রিল্যান্সিং ওয়েবসাইট গুলোর কাজ করার মাধ্যম গুলো অনেক সহজ। আপনাকে বুঝানোর জন্য বলছি। এই সকল কাজ ওয়েবসাইটে সাধারণ দোকান গুলোর মতো দুইটি পক্ষ থাকে।
প্রথম পক্ষ ও ২য় পক্ষ। যাকে বলা হয় ক্রেতা ও বিক্রেতা। ক্রেতা পক্ষ হচ্ছে, ক্লাইন্ট আর বিক্রেতা হচ্ছে- আমার আর আপনার মতো ফ্রিল্যান্সার।
এই সকল ফ্রিল্যান্সিং ওয়েবসাইট গুলোতে ক্লাইন্ট ও ফ্রিল্যান্সারদের মধ্যে যোগ সূত্র সৃষ্টি করে। সাইট গুলোতে ক্লাইন্ট তাদের কি ধরণের সাহায্য ও সহযোগিতা দরকার। এবং সেটির জন্য কত টাকা খরচ করতে পারবে সেই বিষয়ে পোস্ট করে থাকে।
ফ্রিল্যান্সার’রা সেই পোস্ট গুলো দেখে যদি, সেই কাজটি করতে আগ্রহ দেখায়, তখন ক্লায়েন্টকে জানিয়ে দেওয়া হয়।
একটি কাজ করে দেওয়ার জন্য, একাধিক ফ্রিল্যান্সার কাজের আগ্রহ করলে, ক্লায়েন্ট তার পছন্দ অনুযায়ী যে কোন একজন কে কাজটি করার জন্য অনুমতি দিবে।
ক্লায়েন্ট এর কাজ সঠিক ভাবে সম্পন্ন করে দিলে ক্লায়েন্ট ফ্রিল্যান্সিং ওয়েবসাইটে যে টাকা নির্ধারণ করে দিয়েছিল। সেটি আপনাকে পরিশোধ করে দিবে।
এবং ফ্রিল্যান্সিং ওয়েবসাইট সেখান থেকে কিছু টাকা নিজেরা রেখে দিবে আর বাকি অংশ টাকা ফ্রিল্যান্সারদের একাউন্টে জমা করে দিবে।
এই কাজটি গুলোই হলো ফ্রিল্যান্সিং ও আউটসোর্সিং এর সাধারণ মাধ্যম। অনেক ওয়েবসাইটে ফ্রিল্যান্সার ক্লায়েন্টদের মতো নিজেদের স্কিল গুলো অফার আকারে পাবলিশ করতে পারে।
যেমন ফ্রিলান্সিং ওয়েবসাইট গুলোতে একাউন্ট তৈরি করে। সেখানে নিজের প্রোফাইলে ঘন্টা হিসেবে, কাজের মূল্য নির্ধারণ করে দিতে পারবে। (আমি ঘন্টায় $50) এর কাজ করতে আগ্রহী এরকম ভাবে।
ফ্রিল্যান্সিং ওয়েবসাইট গুলো কতটা বিশ্বস্ত হয়?
এই পেজে আপনাকে যে, সকল ফ্রিল্যান্সিং ওয়েবসাইট এর সাথে পরিচয় করিয়ে দেব। সে গুলো এককেটি আন্তর্জাতিক মানেক ওয়েবসাইট। এই ওয়েবসাইট গুলোতে লক্ষ লক্ষ মানুষ কাজ করে প্রচুর টাকা উপার্জন করে।
তাই এই ফ্রিল্যান্সিং ওয়েবসাইট গুলো অনেক বিশ্বস্ত কোন সন্দেহ নেই। তবে সকল ফ্রিল্যান্সিং ওয়েবসাইট গুলোকে এক সাথে হিসাব করলেই হবে না।
অনেক ওয়েবসাইট আছে। যে গুলোতে কাজ করার পরে টাকা প্রদান করে না। প্রতারণা ছাড়া আর কিছুই নয়।
নতুন নতুন ফ্রিল্যান্সিং ওবেসাইট গুলোতে কাজ করার আগে অবশ্যই সেই ওয়েবসাইট গুলোর বিষয়ে বিস্তারিত জেনে নিতে হবে।
এই ক্ষেত্রে মনে রাখবেন, একেক ফ্রিল্যান্সার ওয়েবসাইট একক রকমের পলিসি ও নিয়ম কানুন থাকে। এর মধ্যে কিছূ সাইট আছে। সেই গুলো আবার অন্যান্য ওয়েবসাইট এর সাথে সম্পূর্ণ সাংঘাতিক বলে মনে হতে পারে।
২০২৩ সালের সেরা ফ্রিল্যান্সিং ওয়েবসাইট গুলোর তালিকা
এখান আমরা আপনাকে স্টেপ বাই স্টেপ ফ্রিল্যান্সিং ওয়েবসইট গুলোর সাথে পরিচয় করিয়ে দেব। এই সকল ওয়েবসাইট লক্ষ লক্ষ মানুষ কাজ করে টাকা উপার্জন করছে।
Upwork.Com
Upwork.com ফ্রিল্যান্সিং ওয়েবসাইট। এটি বর্তমান সময়ে সব থেকে জনপ্রিয় একটি ওয়েবসাইট। এখানে জব পোস্টিং, ফিড অনেক সহজে ও দ্রুত আপডেট হয়ে থাকে।
ছোট ছোট বিজনেস ম্যান থেকে শুরু করে বড় বড় মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানি গুলো প্রতিদিন আপওয়ার্কে প্রবেশ করে ফ্রিল্যান্সার খোজে থাকে। টাকার বিনিময়ে কাজ করিয়ে নেওয়ার জন্যে।
আমরা জানি আপওয়ার্কের পুরাতন নাম ছিল- Odex. 2015 সালে এসে Odex আরও একটি নাম করণ করা হয়।
ফ্রিল্যান্সিং ওয়েবসাইট Elance এর সাথে মিলিত করে নতুন এবং বিস্তৃত একটি প্লাটফর্ম এর আবির্ভাব ঘটে। যার বর্তমান নাম হলো আপওয়ার্ক।
এ সময়ে আপওয়ার্ক সব থেকে বিস্তৃত ওয়েবসাইট হওয়ার কারণে। আপনি যে, কাজে দক্ষ হয়ে থাকুন না কেন? এখানে কাজ খুজে পাওয়া অন্য কোন ওয়েবসাইট এর তুলনায় অনেক হারে বেশি। এবং এখানে কাজ করে প্রচুর টাকা উপার্জন করা সম্ভব।
বর্তমান সময়ে প্রতিটি সেক্টরে কম আর বেশি কাজের সুযোগ থাকলেও অনান্য সাইটের মতো আপওয়ার্ক সাইটে।
- ওয়েব ডেভেলপমেন্ট,
- কাস্টমার সাপোর্ট,
- ফ্রিল্যান্স রাইটিং,
- গ্রাফিক্স ডিজাইন
- ও ওয়ার্ডপ্রেস ম্যানেজম্যান্ট
এরকম কাজ গুলোর চাহিদা অনেক বেশি। এই ধরণের কাজ করে ফ্রিল্যান্সার’রা অনেক বেশি পরিমাণের টাকা উপার্জন করতে পারে।
আপনি এই সকল কাজ ঘন্টা হিসেবে ভালো এমাউন্ট নিয়ে কাজ করতে পাবেন। এখানে কাজ করে যে, টাকা জমাতে পারবেন তা আপনারা পেপাল, পেওনিয়ার কিংবা ব্যাংক একাউন্টে ট্রান্সফার করে নিতে পারবেন।
Fiverr.Com
আপনি যদি আউটসোর্সিং কাজে একদম নতুন হোন। তাহলে আপনি কোন ওয়েবসাইটে আউটসোর্সিং শুরু করবেন।
এই বিষয় নিয়ে অনেকের চিন্তা মাথা ঘোরপাক খায়। আপনি যদি নতুন অবস্থায় আউটসোর্সিং করতে চান? তাহলে Fiverr.com সাইটে একাউন্ট খোলে কাজ শুরু করতে পারেন।
ফাইবার একাউন্টে কাজ করে আপনি যখন 5 ডলার আয় করবেন। তখন তারা আপনার দেওয়া ব্যাংক একাউন্টে বা কার্ডের মাধ্যমে টাকা পাঠিয়ে দিবে।
আপনি ফাইবার সাইটে যে, কাজ গুলো করতে পারবেনঃ
• ডিজিটাল মার্কেটিং
• কনটেন্ট রাইটিং
• অনুবাদ
• অডিও, ভিডিও এডিটিং
• লোগো ডিজাইন ইত্যাদি।
উক্ত কাজ গুলোর অনেক চাহিদা রয়েছে ফাইবার ওয়েবসাইটে। এই কাজ গুলো করে আপনি প্রচুর টাকা আয় করতে পারবেন।
উক্ত কাজ গুলো করে আপনি যে টাকা আয় করবেন সেগুলো পেপাল, পেওনিয়ার এবং ব্যাংক একাউন্টে ট্রান্সফার করে নিতে পরবেন।
Freelancer.com
Freelancer.com ওয়েবসাইট অন্যান্য ওয়েবসাইট গুলোর থেকে অনেক বেশি পুরাতন। এটি অনেক জনপ্রিয় প্লাটফর্ম।
এই ওয়েবসাইটে কাজ করার জন্য লোকেরা বড় বড় চাকরি ছেড়ে ফ্রিল্যান্সিং করছে। বেশি টাকা উপার্জন করার জন্য। আমরা জানতে পারছি, এই সাইটে বিশ্বের প্রায় 16 মিলিয়ন লোক কাজ করে।
আমি নিজেও অবসর সময়ে ঘন্টা হিসেবে কাজ করে টাকা উপার্জন করি। এই ওয়েব সাইট এর ঠিকানা শুধু মাত্র অনলাইন প্লাফটর্মে সীমাবদ্ধ না। বাস্তব জীবনেও এর সদরদপ্তর অফিস রয়েছে। এই ওয়েবসাইট এর সদর দপ্তর হচ্ছে- অস্ট্রোলিয়াতে।
বর্তমান সময়ে যারা নতুন ফ্রিল্যান্সার হিসেবে কাজ করতে চান। তাদের জন্য এই ওয়েবসাইটে কাজ করা একটু কঠিন মনে হবে।
আপনি প্রথম অবস্থায় এখানে কোন প্রজক্ট শেষ করার পরে এখানে অতিরিক্ত কিছু ভাতা দেওয়া হয়। তবে স্বাভাবিক অবস্থায় প্রতি প্রজেক্ট এর জন্য উপার্জিত টাকা 10%-20% টাকা কোম্পানি নিজে চার্জ হিবেসে নিয়ে নেন।
আপনি এই ওয়েবসাইটে কাজ করে যে, টাকা পাবেন সেটি আপনার পেপার, পেওনিয়ার, স্ক্রিল বা ব্যাংক এর মাধ্যমে ট্রান্সফার করে নিতে পারবেন।
আরও দেখুন-
- অনলাইনে কোন কাজের চাহিদা বেশি ? (দেখে নিন এখনি)
- মোবাইল দিয়ে ঘরে বসে ইনকাম করার উপায়
- ফ্রিল্যান্সিং শেখার উপায় ও ফ্রিল্যান্সিং ক্যারিয়ারে কিভাবে সফল হবেন?
শেষ কথাঃ
আমাদের এই পেজে আজ আপনাদের সাথে আলোচনা করেছি- ২০২৩ সালের সেরা ফ্রিল্যান্সিং ওয়েবসাইট গুলোর তালিকা নিয়ে।
আপনি উক্ত সাইট গুলোতে একাউন্ট তৈরি করে কাজ শুরু করে দিতে পারবেন। আপনারা একাউন্ট খোলার সাথে সাথে বিভিন্ন কাজের অর্ডার পেয়ে যাবেন।
আমাদের এই আর্টিকেল এর বিষয়ে আপনার যদি কোন প্রশ্ন থাকে। তাহলে নিচে দেওয়া কমেন্ট বক্সে জানাতে পারেন।
এই আর্টিকেল পড়ে কেমন লাগলো অবশ্যই জানাবেন। এবং এটি আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন ধন্যবাদ।