ই পাসপোর্ট কি। ই পাসপোর্ট এর সুবিধা

পাসপোর্ট কি: বর্তমানে সবাই কম বেশি ভ্রমণ করতে পছন্দ করে। আর এই ভ্রমণ করার জন্য পাসপোর্ট এর প্রয়োজন হয়। কারণ আপনি কোন দেশের নাগরিক তা জানার জন্য পাসপোর্ট এর প্রয়োজন হয়।

আপনি যদি এই পাসপোর্ট সম্পর্কে জানতে চান। তাহলে আজকের এই আর্টিকেলটি আপনার জন্য। এই আর্টিকেলের মাধ্যমে ই-পাসপোর্ট সম্পর্কে যাবতীয় তথ্য পেয়ে যাবেন। এছাড়াও ই-পাসপোর্ট এর সুবিধা-অসুবিধা সম্পর্কে জানতে পারবেন।

ই পাসপোর্ট কি
ই পাসপোর্ট কি

তাহলে কথা না বাড়িয়ে আমরা মূল আলোচনায় চলে যাই। এর আগে ই-পাসপোর্ট কি। জানলে আপনাদের পরবর্তী বিষয়গুলো সম্পর্কে বুঝতে অনেক সহজ হবে।

ই-পাসপোর্ট কি

বর্তমানে এমআরপি পাঠযোগ্য পাসপোর্ট এর মত ই-পাসপোর্ট এর বই একই রকম থাকবে। তবে যন্ত্রে পাসপোর্ট এর বই প্রথম দুই পাতায় পাসপোর্টধারীর সংরক্ষিত তথ্য থাকবে। ই পাসপোর্টে এরকম তথ্য থাকবে না।

ই পাসপোর্ট এর মধ্যে পালিমানের তৈরি একটি কার্ড ও অ্যান্টেনা থাকবে। সেই কার্ডের ভেতরে টিপ থাকবে। এবং পাসপোর্টধারীর সকল তথ্য সংরক্ষিত থাকবে।

যেখানে পাসপোর্টধারীর ব্যাক্তির রঙিন ছবি। আঙ্গুলের ছাপ, চোকের আইরিশ। ফলে যেকোন দেশের কর্তৃপক্ষ সহজেই ভ্রমনকারী সম্পর্কে সব তথ্য জানতে পারবেন।

আর এই ধরনের পাসপোর্টকে ডিজিটাল বায়োমেট্রিক পাসপোর্ট বলা হয়। ই-পাসপোর্ট এর বইতে একটি স্মার্ট কার্ডের মত কার্ড থাকবে। আর এখানেই পাসপোর্ট তাদের যাবতীয় তথ্য থাকবে।

এমআরপি ও ই-পাসপোর্ট এর মধ্যে পার্থক্য

ই-পাসপোর্ট এর সাহায্যে আপনি ইলেকট্রিক গেট দিয়ে প্রবেশ করতে পারবেন। এবং আপনার ইমিগ্রেশনের প্রয়োজন হবে। তা আপনি কারো সহযোগিতা ছাড়াই নিজেই করতে পারবেন।

যখন আপনার নিকট একটি ই পাসপোর্ট থাকবে। তখন আপনি এটিএম কার্ডের সাথে তুলনা করতে পারবেন। ই-পাসপোর্টে উন্নত প্রযুক্তির চিপ, মাইক্রোপ্রসেসর ব্যবহার করা হয়েছে। এবং প্রত্যেকটি পাসপোর্টে অ্যান্টেনা দেখতে পারবেন।

এমআরপি পাসপোর্ট দিয়ে আপনি নিজে থেকে ইমিগ্রেশন করতে পারবেন না। ইমিগ্রেশন করার জন্য আপনার প্রয়োজনীয় কাগজপত্র গুলো যাচাই-বাছাই করতে হবে। তারপর আপনি ইমিগ্রেশন এর কাজ সম্পন্ন করতে পারবেন।

এমআরপি পাসপোর্ট এটিএম কার্ডের সাথে তুলনা করতে পারবেন না। কারণ এই ধরনের পাসপোর্ট মেশিন রিডায়েবল হিসাবে ব্যবহার করা হয়।

এমআরপি পাসপোর্টগুলো মেশিন রিডায়েবল হিসেবে ব্যবহার করা হয়। কারণ ই-পাসপোর্ট এর মত উন্নত মানের প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়নি।

এমআরপি পাসপোর্ট ও ই পাসপোর্ট সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে।

আশা করি, এই আলোচনার মাধ্যমে এমআরপি পাসপোর্ট ও ই পাসপোর্ট এর মধ্যে পার্থক্য সম্পর্কে জানতে পেরেছেন।

ই পাসপোর্ট এর সুবিধা ও অসুবিধা

উপরের আলোচনাতে ই পাসপোর্ট কি। এবং এমআরপি পাসপোর্ট ও ই পাসপোর্ট এর পার্থক্য সম্পর্কে আলোচনা করেছি। উপরের বিষয়গুলো জানার পাশাপাশি ই-পাসপোর্ট এর সুবিধা ও অসুবিধা সম্পর্কে জানতে হবে।

বর্তমানে যেসব পাসপোর্ট ব্যবহার করা হয়। তার দুটি দিক রয়েছে। সুবিধা আর অন্যটি হলো অসুবিধা। আপনার এই দুটি দিক সম্পর্কে যে অবশ্যই জানতে হবে।

চলুন, তাহলে এবার ই-পাসপোর্ট এর সুবিধা ও অসুবিধা সম্পর্কে জেনে নেই।

ই-পাসপোর্ট এর সুবিধা

যদি আপনার হাতে একটি ই পাসপোর্ট থাকে। তাহলে আপনি অনেক সুবিধা ভোগ করতে পারবেন। আর আপনি কি কি সুবিধা গুলো ভোগ করতে পারবেন। সেগুলো নিচে আলোচনা করা হলো।

১। যখন আপনার হাতে ই পাসপোর্ট থাকবে। তখন আপনার ভিসা চেক করার জন্য লাইনে দাঁড়িয়ে থাকার প্রয়োজন পড়বে না।

২। ই পাসপোর্ট থাকলে আপনি খুব সহজে ইমিগ্রেশন করতে পারবেন।

৩। ই পাসপোর্ট থাকা অবস্থায়। ই পাসপোর্ট এর মাধ্যমে সহজেই যাতায়াত করতে পারবেন। এবং আপনার সকল তথ্যগুলো কেন্দ্রীয় তথ্যাগার থেকে জানতে পারবেন।

৪। যখন আপনি ই গেটের সামনে দাঁড়িয়ে ই পাসপোর্ট হাতে নিবেন। তখন আপনার ই-পাসপোর্ট এর একটি ছবি তোলা হবে। তারপর আপনার ইমিগ্রেশন এর কাজ সম্পন্ন করা হবে।

৫। যদি কোন কারণবশত আপনার ই পাসপোর্ট এর তথ্য মিল না থাকে। তখন সেখানে থাকা কর্মকর্তারা আপনার ই পাসপোর্ট এর তথ্য চেক দিতে পারবে।

৬। যদি কোন কারনে ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা থাকে। সেক্ষেত্রে আপনি ই-পাসপোর্ট এর সাহায্যে জানতে পারবেন।

৭। বর্তমানে যে সব ই-পাসপোর্ট ব্যবহার করা হয়। সেই সব পাসওয়ার্ড গুলো জাল বা নকল করা সম্ভব নয়। আর এই সব  পাসপোর্টে ৩৮ ধরনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা রয়েছে।

৮। ই পাসপোর্ট এর মধ্যে তিনটি রঙিন ছবি রয়েছে। হাতের ১০ টি আঙ্গুলের ছাপ রয়েছে। এবং কি চোখের আইরিশ এর ছবিও রয়েছে। যা একটি ব্যক্তিকে খুব সহজেই সনাক্ত করা সম্ভব।

উপরের আলোচনা থেকে আপনারা ই পাসপোর্ট এর সুবিধা সম্পর্কে জানতে পারবেন। তাহলে এবার ই পাসপোর্টের অসুবিধা সম্পর্কে জেনে নেয়া যাক।

ই পাসপোর্ট এর অসুবিধা

এতক্ষণ আপনারা ই-পাসপোর্ট এর সুবিধা সম্পর্কে জানলেন। কিন্তু এর পাশাপাশি আপনাদের ই পাসপোর্ট এর অসুবিধা সম্পর্কেও জানা প্রয়োজন। আর ই পাসপোর্ট এর অসুবিধাগুলো কি কি তা আমরা নিচে আলোচনা করব।

আসলে ই পাসপোর্ট এর অসুবিধা বলতে তেমন কিছুই নাই। যদি ই পাসপোর্টের অসুবিধা থাকতো। তাহলে আমরা আপনাদের সাথে আলোচনা করতাম। যদি আপডেট কোন ই পাসপোর্ট এর অসুবিধা থাকে। তাহলে আমরা পরবর্তীতে জানানোর চেষ্টা করব।

ই পাসপোর্ট এর মেয়াদ,ফি ও পৃষ্ঠাসংখ্যা

উপরের আলোচনাগুলো থেকে আপনারা ই পাসপোর্ট সম্পর্কে অনেক আলোচনায় শুনলেন। ই পাসপোর্ট কি এ বিষয়ে আপনারা আলোচনা শুনলেন। ই পাসপোর্ট এর সুবিধা সম্পর্কে আপনাদেরকে জানানোর চেষ্টা করেছি।

কিন্তু এখন আপনাদের সাথে আরেকটি নতুন বিষয় নিয়ে আলোচনা করতে যাচ্ছি। ই পাসপোর্ট এর মেয়াদ, ফি ও পৃষ্ঠা সংখ্যা সম্পর্কে জানতে পারবেন।

ই পাসপোর্ট এমআরপি পাসপোর্ট এর মত ৫ থেকে ১০ বছর পর্যন্ত মেয়াদ থাকে। আবার আপনি যদি পাসপোর্ট এর পৃষ্ঠা সম্পর্কে জানতে চান। তাহলে ঠিক এমআরপি পাসপোর্ট এর পৃষ্ঠা সংখ্যা যত থাকে। ই-পাসপোর্ট এর পৃষ্ঠাসংখ্যা ততই থাকে। এমআরপি পাসপোর্টে ৪৮ পৃষ্ঠা এবং ৬৪ পৃষ্ঠা হয়ে থাকে। আর একইভাবে ই পাসপোর্ট এর পৃষ্ঠা সংখ্যা একই।

যখন কেউ ই পাসপোর্ট এর জন্য আবেদন করবে। তখন তাকে নির্ধারিত ফি প্রদান করতে হবে। কত বছর মেয়াদে পাসপোর্টের কি পরিমান ফি প্রদান করতে হবে। তা নিচে উল্লেখ করা হলো:-

বাংলাদেশের অভ্যন্তরে আবেদনের ক্ষেত্রে (১৫% ভ্যাট সহ):

৪৮ পৃষ্ঠা এবং ৫ বছর মেয়াদ সহ পাসপোর্ট
নিয়মিত বিতরণ: ৪,০২৫ টাকা
জরুরী বিতরণ: ৬,৩২৫ টাকা
অতীব জরুরী বিতরণ: ৮,৬২৫ টাকা

৪৮ পৃষ্ঠা এবং ১০ বছর মেয়াদ সহ পাসপোর্ট
নিয়মিত বিতরণ: ৫,৭৫০ টাকা
জরুরী বিতরণ: ৮,০৫০ টাকা
অতীব জরুরী বিতরণ: ১০,৩৫০ টাকা

৬৪ পৃষ্ঠা এবং ৫ বছর মেয়াদ সহ পাসপোর্ট
নিয়মিত বিতরণ: ৬,৩২৫ টাকা
জরুরী বিতরণ: ৮,৬২৫ টাকা
অতীব জরুরী বিতরণ: ১২,০৭৫ টাকা

৬৪ পৃষ্ঠা এবং ১০ বছর মেয়াদ সহ পাসপোর্ট
নিয়মিত বিতরণ: ৮,০৫০ টাকা
জরুরী বিতরণ: ১০,৩৫০ টাকা
অতীব জরুরী বিতরণ: ১৩,৮০০ টাকা

ই পাসপোর্টে কি ভিসা নিতে হবে

অনেকের মনে প্রশ্ন জাগে যে, এই পাসপোর্ট করলে ভিসা নিতে হবে কিনা। আপনার ই পাসপোর্টটি শুধুমাত্র আপনার পরিচয় থাকবে। এই পাসপোর্ট এর মধ্যে আপনার ব্যক্তিগত পরিচয় ছাড়া আর কিছুই থাকবে না।

এই পাসপোর্ট থাকা সত্ত্বেও আপনার ভিসা প্রয়োজন হবে। কারণ ভিসা হচ্ছে আপনি যে দেশে ভ্রমণ করতে ইচ্ছুক। সেই দেশের সরকার আপনাকে অনুমতি দিলে। আপনি সেই দেশে ভ্রমণ করতে পারবেন। আর অনুমতি হচ্ছে ভিসা।

আশা করি আপনারা বুঝতে পারছেন যে, পাসপোর্ট থাকা সত্ত্বেও ভিসার প্রয়োজন হবে।

Q: বিশ্বের সর্বপ্রথম কোন দেশে ই পাসপোর্ট চালু হয়

A: বর্তমানে আমরা সবাই কমবেশি ই পাসপোর্ট এর ব্যবহার করছি। কিন্তু এটা জানি না যে ই পাসপোর্ট কোন দেশে প্রথম চালু হয়। চলুন তাহলে আমরা ই পাসপোর্ট কোন দেশে প্রথম চালু হয়েছে সে বিষয়গুলো জেনে নিন।

ই পাসপোর্ট এর ব্যবহার সর্বপ্রথম ১৯৯৮ সালে উন্নত প্রযুক্তির ই পাসপোর্ট মালয়শিয়াতে চালু হয়।

Q: ই পাসপোর্ট করতে কি কি লাগে

A: যখন আপনি ই পাসপোর্ট এর জন্য আবেদন করবেন। তখন আপনার বেশ কিছু ডকুমেন্ট এর প্রয়োজন হবে। প্রথমে আপনাকে একটি জিমেইল আইডির প্রয়োজন হবে। তারপর জন্ম নিবন্ধন অথবা জাতীয় পরিচয় পত্র। এবং পিতা-মাতার জাতীয় পরিচয় পত্র।

এসব ডকুমেন্টগুলো দিয়ে অনলাইনের মাধ্যমে আবেদন করার পর আপনাকে নির্ধারিত ফি পরিশোধ করতে হবে। তারপর অনলাইনে আবেদন করার ডকুমেন্ট সহ অন্যান্য প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট পাসপোর্ট অফিসে জমা দিতে হবে।

ই-পাসপোর্ট নিয়ে কিছু কথা

আমরা এতক্ষণ ই-পাসপোর্ট সম্পর্কে অনেক আলোচনা করলাম। ই পাসপোর্ট কি, ই পাসপোর্ট এর সুবিধা সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। এবং কত বছর মেয়েদের ই-পাসপোর্ট এর জন্য কি পরিমাণে ফি প্রদান করতে হবে। তা নিয়ে স্পষ্ট আলোচনা করা হয়েছে।

আশা করি, এই আলোচনাটি আপনি যদি মনোযোগ সহকারে পড়েন তাহলে এই পাসপোর্ট সম্পর্কে অনেক ধারণা পেয়ে যাবেন।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top