ডিজিটাল মার্কেটিং কি? ডিজিটাল মার্কেটিং ও ক্যারিয়ার গঠন

ডিজিটাল মার্কেটিংঃ মার্কেটিং অর্থ হচ্ছে প্রচার করা,যা আমরা সকলেই জানি।কিন্তু ডিজিটাল মার্কেটিং শব্দটার সাথে আমরা খুব কমই পরিচিত। আমরা প্রায়ই শুনে থাকি ” ডিজিটাল মার্কেটিং” শব্দটি।কিন্তু এর মানে বুঝিনা। আজ আমরা সহজ ও সাবলীল ভাষায় জানবো ডিজিটাল মার্কেটিং কি?

প্রযুক্তি নির্ভর এই আধুনিক যুগে অনলাইনের মাধ্যমে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বা সংস্থার প্রচার -প্রচারনাকেই মূলত ডিজিটাল মার্কেটিং বলে।

অন্যভাবেও বলা যায়,ইলেকট্রনিক যন্ত্র /মাধ্যম ব্যবহার করে বিজ্ঞাপন ও প্রচারনা করাকেই ডিজিটাল মার্কেটিং বলে। যেমন, ইমেইল,সোশ্যাল মিডিয়া, ওয়েবসাইট, এবং সার্চ ইঞ্জিন।

মূলত, স্মার্টফোন, ট্যাবলেট, ল্যাপটপ, ডেস্কটপ ইত্যাদির মাধ্যমে ইন্টারনেটের সাথে সংযুক্ত যে কোনও কিছুর মাধ্যমে মার্কেটিং বা প্রচার করাকেই ডিজিটাল মার্কেটিং বলে।

ডিজিটাল মার্কেটিং করে নিজের ক্যারিয়ার গঠন
ডিজিটাল মার্কেটিং করে নিজের ক্যারিয়ার গঠন

ডিজিটাল মার্কেটিং এর সুচনাঃ

আধুনিকতার সাথে সামঞ্জস্যতা বজায় রেখে অনলাইন ভিত্তিক কার্যক্রম শুরু হয় সর্বত্রই।ফেসবুক, টুইটার, হোয়াটসঅ্যাপ, ইমেল এগুলোই এখন সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত হচ্ছে।দেশের এক-তৃতীয়াংশ জনগন যখন এই অনলাইন টুলসগুলো ব্যবহার করে সময় কাটাচ্ছে, তখন একদল সুকৌশলী টিমের মাথায় এই অসাধারণ আইডিয়ার জন্ম হয়।তারা এই অনলাইনে বিচরনকৃত সদস্যদের টার্গেট করে মার্কেটিং করতে চায়।

ফ্রীতে এতগুলো সদস্যদের কাছে তাদের প্রয়োজনীয় তথ্যগুলো তুলে ধরার এই অভিনব আইডিয়ার বাস্তবায়ন ঘটান তখন তারা।যা বর্তমানে ডিজিটাল মার্কেটিং নামে পরিচিত।

Read More: নতুনদের জন্য ফ্রিল্যান্সিং- মার্কেটপ্লেসে কাজ পাওয়ার টিপস

ফেসবুক, টুইটার, ইমেইল এগুলোর মাধ্যমে এখন সহজেই নিজ কোম্পানি, সংস্থা কিংবা পন্যের প্রচার করা সম্ভব হচ্ছে।

ডিজিটাল মার্কেটিং এর গুরুত্বঃ

ডিজিটাল মার্কেটিং যেহেতু অনলাইনে ইন্টারনেটের মাধ্যমেই করা যায়,তাই এরজন্য আলাদা তেমন কোন খরচ হয়না।নির্দিস্ট স্থানে বসেই গ্রাহক তার বার্তাটি লক্ষ লক্ষ মানুষের নিকট পৌছে দিতে পারছে।যা অফলাইনে এত দ্রুত এত মানুষের নিকট পৌছানো সম্ভব হতো না।

আগে প্রচারনার কাজ চলতো পত্রিকা কিংবা মাইকিং এর মাধমে। কিংবা কোন সমাবেশে। যেটা ছিলো একপাক্ষিক। শ্রোতা কেবলই সেটা শুনতে পেতে,কিন্তু প্রয়োজনীয় প্রশ্ন বা কোন তথ্য জানার থাকলেও সেটা জানতে পারতো না।সেক্ষেত্রে প্রচারনাই হতো শুধু,কিন্তু সফলতা হতো খুবই কম।

কোন নতুন বিষয়ে শুনলে আমাদের সকলের মনেই প্রশ্নের ঝড় উঠে। কি,কেন,কিভাবে এরকম হাজারো প্রশ্ন।কিন্তু প্রশ্নগুলো করবো কোথায় সেই বিষয়ে জানা ছিলো না। কেননা সরাসরি কোম্পানি বা সংস্থাগুলোতে গিয়ে তো সবাই জানতে পারতো না।তাই কাস্টমারের জানার কৌতুহল সেখানেই মিলিয়ে যেত।

Read More: ফ্রিল্যান্সিং কি ? ফ্রিল্যান্সিং কিভাবে শিখবো ( ফ্রিল্যান্সিং প্রশ্নের উত্তর )

কিন্তু ডিজিটাল মার্কেটিং এর ক্ষেত্রে সেরকমটা হয়না।এখানে একদিকে যেমন প্রচারণা চলে,অন্যদিকে তেমনি কাস্টমার সাপোর্ট দেওয়ার জন্য নির্দিষ্ট পক্ষ তৈরী থাকে।।তারা কাস্টমারের আগ্রহ ও কৌতুহলকে জাগিয়ে রাখারা জন্য তাদের সাথে যোগাযোগ রাখে। কাস্টমার এর সকল প্রশ্নের সমাধান দেয়।এতে কাস্টমার সেই কোম্পানির প্রতি আকৃষ্ট হয়।

মার্কেটিং তখনই সফলতা পায়,যখন গ্রাহক পরিপূর্ণভাবে সবটা জানতে ও বুঝতে পারে।সেক্ষেত্রে ডিজিটাল মার্কেটিং হচ্ছে উৎকৃষ্ট পন্থা।তাই নিজ কোম্পানির প্রচারগুলো সহজে গ্রাহকদের নিকট পৌছে দেওয়া এবং তাদের সাথে সহজেই যোগাযোগ রাখার জন্য ডিজিটাল মার্কেটিং এর গুরুত্ব অপরিসীম।

বর্তমান যুগে সকলের নিকট বার্তা পৌঁছানোর জন্য এবং এখানে টিকে থাকার জন্য অনলাইনে ডিজিটাল মার্কেটিং অত্যন্ত কার্যকরী। এবং এই ডিজিটাল মার্কেটিং এর মাধ্যমে  অর্থ সাশ্রয় করতে পারবেন এবং তুলনামূলক  কম অর্থে আরও বেশি গ্রাহকের কাছে পৌঁছাতে পারবেন।

ডিজিটাল মার্কেটিং এর বহুমুখী সুবিধাঃ

সকলের সুবিধার্থে ডিজিটাল মার্কেটিং এর সুবিধাগুলো সুবিন্যস্তভাবে নিচে দেওয়া হলোঃ

★ একটি নির্দিষ্ট স্থানে অবস্থান করে সহজেই ডিজিটাল ইলেকট্রনিকস যন্ত্রের মাধ্যমে কোম্পানির প্রচার করা সম্ভব।

★যেহেতু সকল কিছুই এখন অনলাইন ভিত্তিক হচ্ছে, সেক্ষেত্রে সহজেই মার্কেট রিসার্চ করে নিজেদের পন্য বিক্রয় করা যায়।

★টার্গেট কাস্টমার বের করে কেবলমাত্র তাদের কাছের প্রয়োজনীয় বার্তাটুকু প্রেরন করা যায় অতি সহজেই।

★খুবই অল্প খরচে অনেক বেশি কাস্টমারের নিকট পৌছানো  যায়

★জনশক্তিও কম লাগে,

★অনেকসময় ঘরে বসেই কাস্টমারের নিকট পৌছানো, পন্য সেল করা সম্ভব

★ কাস্টমারের সাথে কমোনিকেশন সহজতর হয়

★অল্প মুনাফার অধিক লাভবান হওয়া যায়

Read More: ডিজিটাল মার্কেটিং ও তার শাখা-প্রশাখা

ক্যারিয়ার হিসেবে ডিজিটাল মার্কেটিংঃ

বর্তমানে বাংলাদেশে শিক্ষার হার বেশি। তাই শিক্ষিত জনগনও বেশি।কিন্তু সেই তুলনায় কর্মক্ষেত্র না থাকায় অধিক শিক্ষিত হয়েও অনেকেই ভাল জব পায়না।ফলে তারা বিদেশগামী হোন।কিংবা অনেকেই নিজেকে ব্যর্থ ভেবে হতাশায় নিমজ্জিত হয়।এবং অন্ধকার দুনিয়ায় প্রবেশ করে।

ক্যারিয়ার হিসেবে ডিজিটাল মার্কেটিং ও যে সুবর্ন সুযোগ হতে পারে,এটা আমরা কখনো ভেবে দেখি না,বা অনুধাবনও করতে পারিনা।কিন্তু এই সেক্টরে কাজ করেও অনায়াসেই একটা স্বচ্ছল জীবনযাপন সম্ভব।কিভাবে?  চলুন জেনে নেই কিভাবে সেটা সম্ভব?

ডিজিটাল মার্কেটিং একটা স্কিলস।যা সকলের আয়ত্বে আসেনা।কিন্তু একটু ধৈর্য নিয়ে চেস্টা করলে অনায়াসেই এই সেক্টরে কাজ করা সম্ভব।ডিজিটাল মার্কেটিং এর কয়েকদিন দিক থাকে,যদি সেই দিকগুলোতে দক্ষতা অর্জন করা যায়,তাহলে সহজেই যে কোন কোম্পানির প্রচারনা করা সম্ভব।

বর্তমানে বিশ্বের বেশিরভাগ প্রকল্পই অনলাইনভিত্তিক।তাই তাদের মার্কেটিং গুলোও অনলাইন ভিত্তিক তথা ডিজিটাল মার্কেটিং হয়ে থাকে।তাই তাদের এই কার্য সম্পাদনের জন্য অবশ্যই একজন দক্ষ লোক দরকার যার এই বিষয়ে জ্ঞান ও পারদর্শিতা আছে।অভিজ্ঞতা আছে।

কথাতেই আছে,প্রচারেই প্রসার।অর্থাৎ যত বেশি প্রচারনা চলবে,তত বেশিই প্রসারতা বাড়বে।কোম্পানি যত বড় ও নামকরা হয়ে উঠুক না কেন? প্রতিযোগিতামুলক বাজারে নিজেদের অবস্থান টিকিয়ে রাখার জন্য তাদের প্রতিনিয়তই প্রচারনার কাজ চালুয়ে যেতে হয়।

সকলের মনে সর্বদাই জানান দিতে হবে, তাদের প্রয়োজনে সবসময়ই আমরা পাশে আছি।।আর এই কাজগুলো করার জন্য প্রতিটা কোম্পানিতেই এক্সপার্ট ডিজিটাল মার্কেটিং এর সদস্য নিযুক্ত থাকে।

নিজেকে পারদর্শী হিসেবে প্রস্তুত করতে পারলে আপনি অনায়াসেই সেখানে জয়েন হতে পারেন।।গড়ে তুলতে পারেন নিজের ক্যারিয়ার এই সেক্টরে।

এছারাও এই কাজটি আপনি ঘরে বসেও করতে পারবেন।তাই অধিকতর সহজ হয়ে থাকে এই কাজটি।অল্প শ্রমে,ঘরে বসে অনলাইনের মাধ্যমে আয় করে নিজের ক্যারিয়ার গঠন করার মত এটা হতে পারে দুর্দান্ত সুযোগ।

ডিজিটাল মার্কেটার হতে কি কি কোয়ালিফিকেশন লাগেঃ 

ডিজিটাল মার্কেটার হতে প্রথমত আপনাকে বাংলা ও ইংরেজি ভাষায় পারদর্শী হতে হবে।কেননা মার্কেটিং দেশ -বিদেশ জুরেই চলে থাকে। কোম্পানির প্রসারতা বাড়ানের জন্য তারা কেবলমাত্র দেশেই সীমাবদ্ধ থাকতে ইচ্ছুক নয়,তাই  ইন্টারন্যাশনাল কমোনিকেশন এর জন্য ইংরেজি জানা আবশ্যক।

ডিজিটাল মার্কেটিং কি? কিভাবে কাজ করে? এই বিষয়গুলো নিয়ে শুরুতে জানতে ও শিখতে হবে।কেননা কেন কাজে দক্ষতা অর্জন করার জন্য আগে সেই বিষয়ে পরিপূর্ণ জ্ঞানলাভ প্রয়োজন।

ডিজিটাল মার্কেটিং এর অনেকগুলো দিক থাকে।সেইসব বিষয়গুলোতে দক্ষতা অর্জন অত্যাবশ্যক।কেননা দক্ষতার সাথে কাজ করতে না পারলে কোন কোম্পানিতেই নিজের জায়গা তৈরী করা সম্ভব নয়।তাই সকলদিক নিয়ে বিশদ জ্ঞান অর্জন প্রয়োজন।

Read More: সেরা 10 টি অনলাইনে ইনকাম করার উপায়

নিয়মিত চর্চা করতে হবে ডিজিটাল মার্কেটিং নিয়ে।কেননা প্রতিযোগিতার এই মার্কেটপ্লেসে প্রতিনিয়ত নতুন নতুন আপডেট আসছে।নিয়মিত অনুশীলন ও এক্টিভিটির মাধ্যমে এই সকল আপডেট গুলোর সাথে পরিচিত হওয়া সম্ভব।সেগুলো নিয়ে কাজ করে কোম্পানির সাথে সাথে নিজেকেও এগিয়ে নিয়ে চলা সম্ভব।

মার্কেটপ্লেসে এই সেক্টরে কাজ করতে কোন মুলধন এর প্রয়োজন নেই।তাই নিজেকেই মূলধন হিসেবে প্রস্তুত করতে হবে।যেখানে আপনি নিজেকে ও নিজের দক্ষতাকে বিনিয়োগ করে অতি সহজেই অল্প সময়ে নিজের উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ তৈরী করে নিতে পারেন।

ইতিকথাঃ

বর্তমান সময়ে বিজনেস এর মার্কেটিং করা ছাড়া প্রতিযোগিতায় টিকে থাকা অসম্ভব।প্রতিনিয়ত নতুন নতুন কোম্পানি তৈরী হচ্ছে। এবং তারা তাদের কোম্পানিকে সফলতার চূড়ায় নিয়ে চলার লক্ষ্যে প্রতিনিয়ত কাজ করে চলেছে। হয়তো নিজের কোম্পানির ব্রান্ডিং বা সুনাম আছে বলে মার্কেটিং বন্ধ করে রেখেছেন।

হয়তো ভাবছেন ব্যবসা তো রমরমা চলছে,তাহলে মার্কেটিং কেন?কিন্ত  আপনি এটা জানেন না,স্থীর হয়ে থাকলে চলমান প্রতিটা কোম্পানিই আপনাকে ছাড়িয়ে যাবে।হোকনা সেটা কোন ছোট কিংবা নতুন কোম্পানি।

আপনার প্রতিপক্ষ সর্বদাই ডিজিটাল মার্কেটিং এর মাধ্যমে প্রচারনা সচল রেখেছে। তাই আপনিও সফল হতে চাইলে আজই ডিজিটাল মার্কেটিং এর মাধ্যমে আপনার বিজনেস এর মার্কেটিং করান। আর যদি শুরু করে থাকেন তো সেটাকে চলমান রাখুন। আর নিজ প্রতিষ্ঠান কে এগিয়ে নিয়ে চলুন সফলতার শীর্ষক স্থানে।

1 thought on “ডিজিটাল মার্কেটিং কি? ডিজিটাল মার্কেটিং ও ক্যারিয়ার গঠন”

  1. বাংলা আর্টিকেল লিখে টাকা আয় | টাকা ইনকাম করার ওয়েবসাইট
    hotovaga.com ওয়েবসাইটে আপনি যেকোন বিষয় নিয়ে আর্টিকেল লিখে প্রতিমাসে সর্বোচ্চ 7 থেকে 8 হাজার টাকা পর্যন্ত ইনকাম করতে পারবেন।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top