নতুনদের জন্য ফ্রিল্যান্সিং শুরু করার সেরা টিপস গুলো দেখুন 

আপনি কি নতুন ফ্রিল্যান্সিং শুরু করতে চাচ্ছেন? তাহলে আপনাকে স্বাগতম। আর কিভাবে আপনি আপনার ফ্রিল্যান্সিং ক্যারিয়ারের যাত্রা শুরু করবেন। সে বিষয়ে গোপন টিপস গুলো শেয়ার করার জন্যই আজকের এই আর্টিকেল টি লেখা হয়েছে।

আর যদি আপনি আজকের পুরো আর্টিকেল টি মনোযোগ দিয়ে পড়েন। তাহলে আপনি নতুনদের জন্য ফ্রিল্যান্সিং শুরু করার সেরা টিপস গুলো জানতে পারবেন।

কিভাবে নতুনরা ফ্রিল্যান্সিং শুরু করবেন?

দেখুন, আপনি ফ্রিল্যান্সিং করতে চাচ্ছেন এর মানে হলো আপনি অর্থ ইনকাম করার জন্য ফ্রিল্যান্সিং প্ল্যাটফর্ম কে বেছে নিয়েছেন। কিন্তু আপনি যদি ফ্রিল্যান্সিং করার মাধ্যমে অর্থ ইনকাম করতে চান। তাহলে সবার আগে আপনাকে বেশ কিছু প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে হবে। আর যখন আপনি সেই প্রশ্নের উত্তর গুলো খুঁজে পাবেন। তখন আপনি নতুন ব্যক্তি হিসেবে ফ্রিল্যান্সিং করা শুরু করতে পারবেন। আর সেই প্রশ্ন গুলো হলঃ

আপনি কি মন থেকে ফ্রিল্যান্সিং করতে চাচ্ছেন?

বিভিন্ন সময়ে আমরা যখন জানতে পারি যে, অমুক ব্যক্তি ফ্রিল্যান্সিং করে লাখ টাকা ইনকাম করল। তখন আমরা কোন দিক বিবেচনা না করে সরাসরি ফ্রিল্যান্সিং শেখার জন্য ঝাঁপিয়ে পড়ি। কিন্তু এমনটা করা কখনোই উচিত নয়। বরং আপনি যে কাজই করুন না কেন, আপনাকে সবার আগে ভাবতে হবে যে আপনি কতটা আগ্রহ নিয়ে সেই কাজটি করতে চাচ্ছেন।

Read More: নতুনদের জন্য ফ্রিল্যান্সিং- মার্কেটপ্লেসে কাজ পাওয়ার টিপস

কারণ আপনি যদি অন্যান্য মানুষদের ইনকাম দেখে নিজেই ফ্রিল্যান্সিং করতে চান। তাহলে একটা সময় দেখা যাবে কয়েক মাস ফ্রিল্যান্সিং এর কাজ শেখার পরে আপনার আগ্রহ হারিয়ে যাবে। এবং যখন আপনার আগ্রহ শেষ হবে তখন আপনার আর এই ফ্রিল্যান্সিং এর কাজ গুলো ভালো লাগবে না।

তাই সবার আগে আপনি নিজেই নিজেকে বারবার প্রশ্ন করুন যে, আপনি কি সত্যিকার অর্থেই ফ্রিল্যান্সিং করতে চান। নাকি আপনি আবেগের বসে ফ্রিল্যান্সিং এর কাজ শিখতে চাচ্ছেন। আর এটি হলো একজন নতুন ফ্রিল্যান্সার এর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ একটি ধাপ।

আপনার ফ্রিল্যান্সিং করার জন্য পর্যাপ্ত সময় আছে?

প্রত্যেক টা মানুষের জীবনে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো সময়। আর আপনি যে কাজে সবচেয়ে বেশি সময় ব্যয় করবেন। সেই কাজে আপনার সফলতা পাওয়ার সম্ভাবনা কয়েক গুণ বেড়ে যাবে। তো আপনি যখন নতুন ব্যক্তি হিসেবে  ফ্রিল্যান্সিং করতে চাইবেন। তখন আপনাকে ফ্রিল্যান্সিং শেখার জন্য যথেষ্ট পরিমাণ সময় ব্যয় করতে হবে।

এবং যখন আপনি ফ্রিল্যান্সিং এর কাজ গুলো শিখবেন। তারপর আপনাকে সেই ফ্রিল্যান্সিং কাজ করার জন্য অনেক সময় ব্যয় করতে হবে। এখন আপনাকে ভাবতে হবে যে, এই সব কিছু করার জন্য আপনার হাতে পর্যাপ্ত সময় আছে কি না।

তো যদি আপনি সময় ব্যয় করতে পারেন তাহলে ফ্রিল্যান্সিং শুরু করে দিন। কিন্তু আপনার হাতে যদি পর্যাপ্ত সময় না থাকে, তাহলে আপনার ফ্রিল্যান্সিং করার মনোভাব কে দাবিয়ে রাখুন।

Read More: ফ্রিল্যান্সিং কি ? ফ্রিল্যান্সিং কিভাবে শিখবো ( ফ্রিল্যান্সিং প্রশ্নের উত্তর )

ফ্রিল্যান্সিং করার জন্য সকল ইকুইপমেন্ট আছে কিনা?

আকাশে উড়তে গেলে যেমন বিমান অথবা রকেট এর প্রয়োজন হয়। ঠিক তেমনি ভাবে আপনি যদি ফ্রিল্যান্সিং করতে চান। তাহলে অবশ্যই আপনার নিকট একটি ভাল মানের কম্পিউটার থাকতে হবে। হয়তোবা আপনি অনেক জায়গায় দেখতে পারবেন যে, মোবাইল দিয়ে ফ্রিল্যান্সিং করা সম্ভব। কিন্তু আমি আপনাদের বলছি যে, মোবাইল দিয়ে আপনি কখনোই পূর্ণাঙ্গ ভাবে ফ্রিল্যান্সিং করতে পারবেন না।

তাই আপনি যদি যথাযথ ভাবে ফ্রিল্যান্সিং শিখতে চান। এবং ফ্রিল্যান্সিং করার মাধ্যমে অর্থ উপার্জন করতে চান। তাহলে আপনার নিকট অবশ্যই একটি ভালো মানের কম্পিউটার থাকতে হবে। এর পাশাপাশি উক্ত কম্পিউটারের সাথে ভালো মানের ইন্টারনেট কানেকশন এর প্রয়োজন হবে।

কিভাবে নতুনরা ফ্রিল্যান্সিং শুরু করবেন?

উপরে যে প্রশ্ন গুলোর কথা উল্লেখ করা হয়েছে, আপনি যদি সেই সমস্ত প্রশ্নের উত্তর জানতে পারেন। তাহলে আপনি সরাসরি ফ্রিল্যান্সিং শেখার কাজ শুরু করে দিন। তবে নতুন  ব্যক্তিদের মধ্যে অনেকেই বুঝতে পারে না যে, কিভাবে ফ্রিল্যান্সিং শুরু করবে।

তো তাদের জন্য এবার আমি একটি গাইডলাইন শেয়ার করব। যে গুলো ফলো করে আপনিও ফ্রিল্যান্সিং শুরু করে দিতে পারবেন। আর সে গুলো হলো,

সঠিক ফ্রিল্যান্সিং নিস বাছাই করুন

বর্তমান সময়ে আপনি ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেসে বিভিন্ন ধরনের কাজ দেখতে পারবেন। তো আপনি আসলে যে কাজটি করবেন, সেটিকেই বলা হবে ফ্রিল্যান্সিং নিস। যেমন ধরুন, আপনি যদি গ্রাফিক্স ডিজাইন নিয়ে ফ্রিল্যান্সিং করেন। তাহলে আপনার  ফ্রিল্যান্সিং নিস হবে, গ্রাফিক্স ডিজাইন। ঠিক তেমনি ভাবে আপনি এমন অনেক ধরনের ফ্রিল্যান্সিং এর নিস দেখতে পারবেন।

তো এখানে আপনাকে যথেষ্ট বিচার বিবেচনা করে নির্দিষ্ট কাজে নিজের দক্ষতা অর্জন করতে হবে। সে জন্য বর্তমান সময়ে কোন কোন ফ্রিল্যান্সিং জব এর চাহিদা রয়েছে। এবং ভবিষ্যৎ সময়ে কোন ধরনের ফ্রিল্যান্সিং জবের চাহিদা আরো বেশি বৃদ্ধি পেতে পারে। সেটি যাচাই করার জন্য যথেষ্ট সময় ব্যয় করুন।

নির্দিষ্ট কাজে নিজেকে দক্ষ হিসেবে গড়ে তুলুন

বাস্তব জীবনে যেমন আপনার দক্ষতা ছাড়া আপনি কোথাও মূল্যায়ন পাবেন না। ঠিক তেমনি ভাবে ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেসে অবশ্যই আপনার ফ্রিল্যান্সিং জবে দক্ষ হতে হবে। আর এই দক্ষতা অর্জন করার জন্য আপনাকে সবার আগে ফ্রিল্যান্সিং জব এর কাজ শিখতে হবে।

যেমন ধরুন, আপনি যদি ওয়েব ডিজাইন নিয়ে কাজ করতে চান। তাহলে অবশ্যই আপনাকে ভালো ভাবে ওয়েব ডিজাইন কি, কিভাবে ওয়েব ডিজাইন করতে হয়, এই যাবতীয় বিষয় গুলো শিখতে হবে।

Read More: ডিজিটাল মার্কেটিং ও তার শাখা-প্রশাখা

আর শেখার জন্য আপনি কোন স্বনামধন্য আইটি প্রতিষ্ঠান অথবা গুগল, ইউটিউব থেকেও এই বিষয় গুলো শিখে নিতে পারেন। তবে আপনি যেখানেই শিখুন না কেন, আপনি যা শিখবেন তা অবশ্যই পূর্ণাঙ্গ ভাবে শেখার চেষ্টা করবেন।

ইংরেজি ভাষায় নিজের দক্ষতা বৃদ্ধি করুন

আপনি যখন ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেস গুলো তে কাজ করবেন। তারপর আপনার যে সকল বায়ার থাকবে তারা অধিকাংশই ইংরেজি তে কথা বলে। আর আপনি যদি তাদের আন্ডারে কাজ করতে চান। তাহলে অবশ্যই আপনাকে তাদের সাথে ইংরেজি ভাষায় কথা বলতে হবে।

তাই যখন আপনি ফ্রিল্যান্সিং শিখবেন তখন অবশ্যই আপনার ইংরেজি তে কথা বলার অভ্যাস তৈরি করবেন। যাতে করে আপনি আপনার মনের ভাব ইংরেজিতে প্রকাশ করতে পারেন। এবং কেউ যদি আপনাকে ইংরেজি তে কিছু বলে, তাহলে আপনি যেন বুঝতে পারেন।

নিজের ফ্রিল্যান্সিং বায়ো তৈরি করুন

এই ফ্রিল্যান্সিং বায়ো এর প্রয়োজন তখনই হবে, যখন আপনি নির্দিষ্ট কোন ফ্রিল্যান্সিং জবে নিজেকে দক্ষ হিসেবে গড়ে তুলবেন। যেমন ধরুন, আপনি দীর্ঘ সময় ধরে কন্টেন্ট রাইটিং শিখলেন। তো এখন আপনাকে একটা ওয়েবসাইট তৈরি করতে হবে। তারপর সেই ওয়েবসাইটের মধ্যে আপনার নিজের লেখা কন্টেন্ট পাবলিশ করতে হবে।

এর পাশাপাশি আপনার ওয়েবসাইটটি কে এমন ভাবে সাজিয়ে তুলতে হবে। যেন কেউ আপনার ওয়েব সাইট এর মধ্যে প্রবেশ করার সাথে সাথেই আপনার যাবতীয় তথ্য গুলো খুঁজে নিতে পারে।

ঠিক তেমনি ভাবে আপনি যে কোন ফ্রিল্যান্সিং এর কাজ শিখুন না কেন। আপনাকে অবশ্যই একটি পোর্টফলিও তৈরি করে নিতে হবে। আর এটি হল প্রত্যেক টা ফ্রিল্যান্সার এর জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ একটি কাজ।

সবশেষে ফ্রিল্যান্সিং মার্কেট প্লেসে কাজ করুন

যদি আপনি উপরের সকল ধাপ গুলো সঠিক ভাবে অনুসরণ করতে পারেন। তারপরে আপনাকে সরাসরি ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেসে গিয়ে কাজ করতে হবে। তো আপনার আসলে কোন ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেসে কাজ করা উচিত। সেটা নির্ভর করবে আপনি কোন কাজে নিজেকে দক্ষ হিসেবে গড়ে তুলতে পেরেছেন তার উপর।

তবে বর্তমান সময়ে যে সকল ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেস এর জনপ্রিয়তা রয়েছে। সে গুলোর তালিকা নিচে দেওয়া হল। যেমন,

  1. Fiverr,
  2. Toptal,
  3. Jooble,
  4. Freelancer.com,
  5. Upwork,
  6. Flexjobs,
  7. SimplyHired,
  8. Guru,
  9. LinkedIn,
  10.  Behance,

উপরের তালিকায় আপনি বেশ কিছু ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেস এর নাম দেখতে পাচ্ছেন। তো আপনি আপনার পছন্দমত এই ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেস গুলো তে কাজ করতে পারবেন। এবং এ গুলো তে কাজ করে আপনি অন্যান্য মানুষদের মতো প্রচুর পরিমাণ টাকা ইনকাম করে নিতে পারবেন।

নতুনদের জন্য ফ্রিল্যান্সিং নিয়ে আমাদের শেষকথা

আপনারা যারা নতুন ফ্রিল্যান্সিং শুরু করতে চাচ্ছেন। তারা আসলে কোন কোন ধাপে ফ্রিল্যান্সিং শিখবেন এবং কিভাবে ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেসে কাজ করবেন। সে গুলো নিয়ে আজকে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। আর আপনি অবশ্যই আজকের দেখানো এই পদ্ধতি গুলো অনুসরণ করে ফ্রিল্যান্সিং শেখার চেষ্টা করবেন।

এবং আপনি যদি ফ্রিল্যান্সিং সম্পর্কে আরও অজানা তথ্য জানতে চান। তাহলে আমাদের কমেন্ট করে জানিয়ে দিবেন। ধন্যবাদ, এতক্ষণ ধরে আমাদের সাথে থাকার জন্য। ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন। এবং নতুন কিছু জানতে আমাদের ওয়েবসাইটে নিয়মিত ভিজিট করুন।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top